Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

 উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!!!!.................. উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!!! উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!..........................উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!!!!.............. উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!!! উপজেলা প্রশাসন, লালপুর, নাটোরে আপনাকে স্বাগতম!!....................


ভাষা ও সংস্কৃতি

ভাষাঃ

লালপুর উপজেলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্রময়। লালপুর উপজেলার জনসাধারণ যে ভাষায় কথা বলে তা বাংলা ভাষার পাঁচটি উপ-ভাষার অন্যতম উপ-ভাষা বরেন্দ্রী‘র অন্তর্ভুক্ত। অন্যান্য এলাকার মতো এখানেও দলিল দস্তাবেজ লেখা তথা দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার সাধু রুপ প্রচলিত। তবে এলাকার শিক্ষিত জনগোষ্ঠী চলিত ভাষায় লেখালেখি করা বা কথাবার্তা বললেও সাধারণ মানুষ নিজ নিজ অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় (কথ্য ভাষায়) কথা বলে অভ্যস্ত যা অস্টিক ভাষা দ্বারা প্রভাবিত। সময়ের বিবর্তনে এখন অফিস আদালতে সাধু ভাষার ব্যবহার ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে এবং চলিত বা শিষ্ট ভাষার ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। লক্ষণীয় বিষয় লালপুর উপজেলায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু আদিবাসী যেমন সাঁওতাল, ওরাও, বুনো, পাহাড়ী, ভূঁইমালি, বাগদী, কামার ইত্যাদি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বাস করে। এলাকার বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাথে বাস করে তারাও এখন বাংলা ভাষাতেই কথা বলে। তবে পারিবারিক, সামাজিক বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে তারা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ব্যবহার করে থাকে।

সংস্কৃতিঃ

            প্রচীনকালে কৃষি, মাছধরা, মাটির তৈজস পত্র তৈরী ও মাতৃ-আরাধনার মাধ্যমেই লালপুর উপজেলায় সংস্কৃতির গোড়া পত্তন হয়। এছাড়া নৌকা, গরুর গাড়ী, লাঙ্গল নির্মাণ, কাঠ ও বাঁশের বেড়ায় কাদা-মাটির আস্তরন দিয়ে গৃহ নির্মাণ, পাতা ও খড়ের ছাউনিযুক্ত কুঁড়েঘর নির্মাণও ছিল তৎকালীন সংস্কৃতির উলেস্নখযোগ্য দিক। কালক্রমে শাঁখার অলংকার এবং বাঁশ ও বেতের আসবাব পত্র তৈরী এই জনপদে চলমান সংস্কৃতির ধারায় নতুন মাত্রা যুক্ত করে। রাজনৈতিক ও ভৌগলিক সীমানা ডিঙ্গিয়ে সংস্কৃতির এই বন্ধন অনেক দুর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে।

            শুরু থেকেই উৎসবপ্রিয় এই জনপদের মানুষ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও লোকজ উৎসব-পার্বন উদযাপনসহ সংস্কৃতির বৈচিত্রময় ধারার সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। মানুষের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিল আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ লোক সংস্কৃতি যথা পাঁচালী, জারী, সারি, ভাটিয়ালি, ভা্ওয়াইয়া, মুর্শিদী, পালাগান, কবিগান, আলকাফ গান, মনসার গান, যাত্রা, নাটক , সাপখেলা, লাঠিখেলা, বদন ও হাডুডু খেলা। রাজকুমার। অত্র উপজেলায় উদযাপিত উৎসবসমুহ নিম্নে শ্রেণী ভিত্তিক উল্লেখ করা হলোঃ

১। লোকজ উৎসবঃ গার্সী, নবান্ন উৎসব, পৌষ সংক্রান্তি, তেইরি, চৈত্র সংক্রান্তি ইত্যাদি।

২। ধর্মীয় উৎসবঃ

(ক) সনাতন ধর্মীয়ঃ জন্মাষ্টমী, শিব রাত্রী, দুর্গা পূজা, লক্ষী পূজা, শ্যামা পূজা, বাসন্তী পূজা, স্বরসতী পূজা, শীতলা পূজা, মনসা দেবীর পূজা, রাস পূজা, রথযাত্রা, দোলযাত্রা ইত্যাদি।

(খ) ইসলাম ধর্মীয়ঃ ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, ঈদুল ফিত্‌র, ঈদুল আয্হা, শবে মিরাজ, শবে বরাত, শবে কদর, আখেরী চাহার সোম্বা, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম, মহররম ইত্যাদি।

(গ) খ্রিষ্ট ধর্মীয়ঃ বড় দিন (খ্রিস্টমাস ডে), গুড ফ্রাইডে, ইস্টার সানডে ইত্যাদি।

(ঘ) বৌদ্ধ ধর্মীয়ঃ বুদ্ধ পূর্ণিমা, আষাঢ়ী পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমা ইত্যাদি।

৩। সামাজিক উৎসবঃ বিয়ে-শাদী, খত্না, আকিকা, অন্নপ্রাসন, গড়গড়ি দেওয়া ইত্যাদি।

           কালের বিবর্তনে এসবের অনেক কিছুই এখন বিলুপ্ত প্রায়। তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি ও বিশ্বায়নের ফলে আকাশ সংস্কৃতির অবাদ প্রবাহে বর্তমানে  গতিহারা দেশীয় সংস্কৃতি। ভীনদেশী সংস্কৃতির প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার আদি সংস্কৃতি। তবে সময়ের প্রয়োজনে স্বাধীন বাংলাদেশে যুক্ত হয়েছে উৎসবের নতুন অনুসঙ্গ। যেমন পহেলা বৈশাখ, মহান স্বাধীনতা দিবস, মহান বিজয় দিবস, শহীদ দিবস তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শোক দিবস। সারা দেশের মতো সার্বজনীনন উৎসব পহেলা বৈশাখ এখন এই জনপদের মানুষেরও প্রানের উৎসবে পরিনত হয়েছে। সেই সাথে সকল জাতীয় ও আমত্মর্জাতিক দিবস সমুহ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপিত হয় এই উপজেলায়।         

তথ্য সূত্রঃ

                ১। বাংলা পিডিয়া - এশিয়াটিক সোসাইটি।

                ২। বাংলা ও বাঙালীর কথা - আবু মোমেন।

                ৩। আমাদের প্রাচীন শিল্প - তোফায়েল আহমেদ।

                ৪। রাজশাহী‘র উপ-ভাষা - টি, এম শফিকুল ইসলাম।